বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ০১:৪৭ পূর্বাহ্ন
নরসিংদীতে জুলাই আন্দোলনের আহতদের চেক বিতরণ, বঞ্চিতদের ক্ষোভ ও যাচাই নিয়ে বিতর্ক
আর এ লায়ন সরকার, নরসিংদী।
নরসিংদী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির (সর্বনিম্ন আহত) যোদ্ধাদের আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়েছে। সকাল ১১টায় নরসিংদী শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ৫০০ যাচাই-বাছাই করা আহত ব্যক্তির প্রত্যেককে ১ লক্ষ টাকা করে চেক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জনাব আবু তাহের মো. শামসুজ্জামান। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান, সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ আমিরুল হক, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আব্দুল ওয়াহাব রাশেদসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
ডা. সৈয়দ আমিরুল হক জানান, প্রায় ৫ হাজার আবেদনকারীর মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করে ৫০০ জনকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক বলেন, যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্ব জেলা সমন্বয়করা পালন করেছেন এবং তাঁদের দেয়া তালিকায় ভিত্তি করেই চেক প্রদান হয়েছে।
তবে এই যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে বেশ কিছু বিতর্ক ও বঞ্চনার অভিযোগ উঠেছে। পলাশ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাজী জাহিদ বলেন, পলাশ ভাগ্যেরপাড়ার আদম ব্যবসায়ী সালাম চেক নিয়েছেন, তিনি কোনো সাংবাদিক নন; এমনকি নিজের নামটাও লিখতে জানেন না। তাঁকে কখনো কোনো আন্দোলনে দেখা যায়নি। মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারকে ধোঁকা দিয়ে টাকা নিয়েছে, যা সাংবাদিক সমাজের জন্য লজ্জাজনক।”
ছাত্রনেতা পাপন জানান, “আমরা তাঁকে আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবে জানি। পলাশের কোনো আন্দোলনে তাঁকে পাইনি। বরং ইটাখোলা পুলিশ ফাঁড়ি ভাঙচুরের সময় গোপনে ভিডিও করতে গিয়ে ছাত্রদের হাতে গণধোলাই খেয়েছেন।”
এছাড়া, জুলাই আন্দোলনে আহত নরসিংদীর তরুয়া মহল্লার রহমত উল্লাহ বলেন, “আন্দোলনের সময় জেলখানার মোড়ে পুলিশের গুলিতে আমার চোখ ও মাথার সমস্যা হয়েছে। সকল কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও আমরা কোনো সহযোগিতা পাইনি। যারা ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ছিল, তারাই আজকে সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে।”
জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান বলেন, “অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম না, তবে যাচাই-বাছাই অনেক কঠোরভাবে করা হয়েছে। যদি কোনো ভুল থাকে, জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানান।” জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আব্দুল ওয়াহাব রাশেদ জানান আমরা শুধু অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছি বাকিটুকু সমন্বয়ক ও জেলা প্রশাসক মহোদয় জানেন।
সমন্বয়ক মনিয়া রহমান বলেন যারা ছাত্রদের পক্ষে গিয়ে স্বৈরাচার পথ আন্দোলনে আহত হয়েছেন তারাই একমাত্র জুলাই বীর তাদের মধ্যে সাংবাদিকরা যারা পক্ষে ছিল তারা কিন্তু যারা ছাত্রদের বিপক্ষে গিয়ে মার খেয়েছে তারা আওয়ামী লীগের ধোসর, আজকেও চেক নেওয়ার আগ মুহূর্তে একজন আওয়ামী লীগের প্রমাণিত হওয়ায় তার চেক আটকে দেওয়া হয়। পলাশের আব্দুস সালাম নামের যে ব্যক্তি চেক পেয়েছে তাকে কে আইডেন্টিফাই করেছে আপনারা খুঁজে বের করুন আমরাও তথ্য পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিতর্ক ও অভিযোগের মাঝেও সরকারি অনুদান পেয়ে আহতদের মধ্যে অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে বিতর্কিত নামগুলো নিয়ে প্রশাসনের সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।